মাদারীপুরঃ মাদারীপুর পৌর শহরের শকুনী লেকপাড়ের রাস্তায় বৃদ্ধা জোবেদা খাতুনকে গভীর রাতে ফেলে চলে যান তার সন্তানরা। দুই শিক্ষার্থী সকালে হাটতে গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে ভর্তি করেন সদর হাসপাতালে।
এরপর জেলা প্রশাসক ওই বৃদ্ধাকে দেখতে হাসপাতালে যান। প্রথম দিন নিজের নাম আর সন্তান-বউ মিলে ফেলে রেখে যাওয়ার কথাটুকুই বলতে পেরেছিলেন জোবেদা। তারপর থেকে আর কথা বলতে পারছেন না। কিছুটা স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলেছেন তিনি।
মাদারীপুর সদর হাসপাতালে গিয়ে জানা যায়, গত ৩১ অক্টোবর গভীর রাতে সন্তানরা মাদারীপুর শহরের শকুনী লেকের উত্তরপাড়ে রাস্তায় জোবেদাকে ফেলে রেখে যায়। সকালে সরকারি নাজিমউদ্দিন কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী বিলাস হালদার ও মেহেদী ইসলাম হাঁটার সময় কেউ পড়ে আছে দেখে এগিয়ে যান। গিয়ে দেখেন, হাতে-মাথায় রক্তাক্ত অবস্থায় এক বৃদ্ধা পড়ে আছে। তাৎক্ষণিক তাঁরা বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।
উদ্ধারকারী শিক্ষার্থী বিলাস হালদার বলেন, ‘আমরা দুজনে বৃদ্ধাকে দেখে তাৎক্ষণিক সদর হাসপাতাল নিয়ে ভর্তি করি। তারপরে জেলা ছাত্রলীগের নেতা পিয়াস শিকদার, নাজমুল হোসেন, মাহমুদ হাসান দিনার, শাওন আহমেদ, অমল কুণ্ডসহ বেশ কয়েকজন নেতাকে বিষয়টি বলি। তারাও ওই দিন হাসপাতালে এসে বৃদ্ধার চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা করেন।’
ওই দিন বৃদ্ধা নিজের নাম ও তাঁর সন্তান-বউ মিলে মারধর করে ফেলে গেছেন বলে জানান। তারপর থেকে আর কথা বলতে পারেন না। শুধু তাকিয়ে থাকেন। বর্তমানে তাঁর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
এ ব্যাপারে সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোষ জানান, উদ্ধারের পর থেকে জোবেদা খাতুনকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। কিছুটা মেডিসিনের অভাব দেখা দিলে সমাজসেবার সহযোগিতায় এনে চিকিৎসা দিচ্ছি। বর্তমানে বৃদ্ধা কিছুটা সুস্থ হলেও প্রচণ্ড মানসিক আঘাতে স্মৃতিশক্তি কিছুটা লোপ পেয়েছে। তবে তার আত্মীয়স্বজনদের পেলে সব ঠিকও হয়ে যেতে পারে।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম বৃদ্ধাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দিতে সরকারি সহযোগিতার কথা জানিয়ে বলেন, ‘সন্তানরা যদি এখনো তার মাকে নিয়ে গিয়ে সেবা-যত্ন করতে চায়, আমাদের কোনো অভিযোগ নেই। তবে যদি এমন অবস্থায় ফেলে রাখে, তাহলে তাদের পরিচয় পাওয়া গেলে আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া যদি কোনো হৃদয়বান ব্যক্তি বর্তমানেও বৃদ্ধাকে নিতে চায়, তাহলে তাদের জিম্মায় দেওয়া হবে। আমরা সরকারের তরফ থেকে সহযোগিতা করে যাচ্ছি।’
শনিবারের চিঠি / আটলান্টা/ ০৭ নভেম্বর , ২০১৮
বাংলাদেশ সময়: ৮:১৪ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ০৭ নভেম্বর ২০১৮
https://thesaturdaynews.com | Sikder Rahman
Development by: webnewsdesign.com