অরলান্ডো, ফ্লোরিডাঃ ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের অরলান্ডো শহরের সমকামীদের ক্লাবে বন্দুকধারীর হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে অন্তত ৫০ জনে পৌঁছেছে। আহত হয়েছেন আরো ৫৭ জন। এদের মধ্যে অনেকের অবস্থাই গুরুতর।
এ ঘটনায় ফ্লোরিডার অরলান্ডো নগরের মেয়র বাডি ডেয়ার রাজ্যটিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন।
এদিকে অরলান্ডো পুলিশের প্রধান জন মিনা জানিয়েছেন, মাত্র একজন হামলাকারী শহরের পালস ক্লাবে এই হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। ওমর মতিন (২৯) নামের ওই হামলাকারী আফগানিস্তানের বংশোদ্ভুত বলে জানান তিনি। পুলিশ আরো জানায়, বহু লোককে হত্যা করে ওমর পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে।
এদিকে ওয়াশিংটনে এই ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে দেশবাসীকে ঘটনাটি জানাবেন স্বয়ং মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
এর আগে স্থানীয় সময় শনিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে অরলান্ডো শহরের পালস নামের এক সমকামীক্লাবে এ হামলার ঘটনা ঘটে। সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সময় রাত ২টায় বন্দুকধারী গুলিবর্ষণ করলে ক্লাবের এক কর্মকর্তা তাকে প্রতিহতের চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে দৌড়ে ওই ক্লাবে ঢুকে পড়ে বন্দুকধারী।
হামলার সময় নৈশক্লাবে অন্তত ৩২০ জন নাগরিক ছিলেন। এদের মধ্যে অন্তত ৫০ জনকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত করেছেন অরলান্ডো পুলিশের প্রধান জন মিনা। তবে হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পুলিশপ্রধান আরো জানান, গুলি শুরু হওয়ার প্রায় তিন ঘণ্টা পর ওই ক্লাবে ঢুকে হামলাকারীকে হত্যা করে পুলিশ। হামলাকারী দুটি আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
অরলান্ডো পুলিশের প্রধান জন মিনার বরাত দিয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম আরো জানায়, হামলার সময় ওমর বেশ কয়েকজনকে জিম্মি করে রাখে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পৌঁছলে তার সঙ্গে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হয় ওমর।
পরে আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়। এদিকে আহতদের চিকিৎসায় রক্তের সংকট দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এ হামলার ঘটনায় কোনো জঙ্গি সংগঠন জড়িত রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখছে দেশটির পুলিশ।
এর আগে শনিবার গভীর রাতে পালস ক্লাবের পক্ষ থেকে এক ফেসবুকবার্তায় সবাইকে ক্লাব থেকে দৌড়ে পালাতে বলা হয়। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিওতে কয়েক ব্যক্তিকে ক্লাবের বাইরে চিকিৎসাসেবা নিতে দেখা যায়।
শনিবার রাতে নিজস্ব সূত্রের বরাত দিয়ে স্থানীয় টেলিভিশন প্রতিবেদক স্টুয়ার্ট মুর দাবি করেন, এ ঘটনায় অন্তত ২০ ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তিনি আরো বলেন, কয়েকজন জিম্মি নিয়ে হামলাকারী এখনো নাইটক্লাবে অবস্থান করছে এবং তার শরীরে বোমা জড়ানো আছে।
অ্যানথনি টোরেস নামের এক ব্যক্তি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে অরলান্ডোর নাইটক্লাবে হামলার পর এর ভিডিও পোস্ট করেন। তিনি জানান, ‘ প্রথমে কয়েকটি গুলি করা হয়। এ সময় কারো মৃত্যু হয়েছে বলে চিৎকার করছিল মানুষ।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা অপর কয়েকটি ছবিতে জরুরি বিভাগের কয়েকটি গাড়িকে নৈশ ক্লাবের দিকে যেতে দেখা যায়।
গত শুক্রবার অরলান্ডোর এক কনসার্টে গুলিতে ২২ বছর বয়সী পপসঙ্গীত শিল্পী ক্রিস্টিনা গ্রিমি নিহত হওয়ার একদিন না পেরোতেই ঘটনাস্থলের মাত্র চার কিলোমিটার দূরে নৈশ ক্লাবে গুলিবর্ষণে প্রাণহানির এ ঘটনা ঘটল।
শনিবারের চিঠি/আটলান্টা/ মে ১৩, ২০১৬
বাংলাদেশ সময়: ১০:২৪ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ১৩ জুন ২০১৬
https://thesaturdaynews.com | Sikder Rahman
Development by: webnewsdesign.com