শনিবার প্রতিবেদনঃ আজ ২ ফেব্রুয়ারি বাংলার সূর্য সন্তান বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমানের জন্মদিন। ১৯৫৩ সালের এই দিনে যশোরের মহেশপুর উপজেলার খোরদা খালিশপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। গ্রামের বর্তমান নাম হামিদ নগর ।
তাঁর পিতা আব্বাস আলী মণ্ডল, মাতা মোসাম্মাৎ কায়সুন্নেসা। ১৯৭১ সালের ২রা ফেব্রুয়ারি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে যোগদান করেন। ১৯৭১ সালের অক্টোবর মাসের শেষভাগে হামিদুর রহমান ১ম ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের সি কোম্পানির হয়ে ধলই সীমান্তের ফাঁড়ি দখল করার অভিযানে অংশ নেন। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ১২৫ জন মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধে অংশ নেয়। মুক্তিবাহিনী পাকিস্তান বাহিনীর মেশিনগান পোস্টে গ্রেনেড হামলার সিদ্ধান্ত নেয়। গ্রেনেড ছোড়ার দায়িত্ব দেয়া হয় হামিদুর রহমানকে। তিনি পাহাড়ি খালের মধ্য দিয়ে বুকে হেঁটে গ্রেনেড নিয়ে আক্রমণ শুরু করেন। দুটি গ্রেনেড সফলভাবে মেশিনগান পোস্টে আঘাত হানে, কিন্তু তাঁর পরপরই হামিদুর রহমান গুলিবিদ্ধ হন। সে অবস্থাতেই তিনি মেশিনগান পোস্টে গিয়ে সেখানকার দুই জন পাকিস্তানী সৈন্যের সাথে হাতাহাতি যুদ্ধ শুরু করেন। এভাবে আক্রমণের মাধ্যমে হামিদুর রহমান এক সময় মেশিনগান পোস্টকে অকার্যকর করে দিতে সক্ষম হন। এই সুযোগে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের মুক্তিযোদ্ধারা বিপুল উদ্যমে এগিয়ে যান, এবং শত্রু পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে পরাস্ত করে সীমানা ফাঁড়িটি দখল করতে সমর্থ হন। কিন্তু হামিদুর রহমান বিজয়ের স্বাদ আস্বাদন করতে পারেননি, ফাঁড়ি দখলের পরে মুক্তিযোদ্ধারা শহীদ হামিদুর রহমানের লাশ উদ্ধার করে।
১১ ডিসেম্বর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় হামিদুরের দেহাবশেষ ঢাকার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়
হামিদুর রহমানের মৃতদেহ সীমান্তের অল্প দূরে ভারতীয় ভূখণ্ডে ত্রিপুরা রাজ্যের হাতিমেরছড়া গ্রামের স্থানীয় এক পরিবারের পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়। ২০০৭ সালের ১০ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ রাইফেলসের একটি দল ত্রিপুরা সীমান্তে হামিদুর রহমানের দেহাবশেষ গ্রহণ করে, এবং যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে কুমিল্লার বিবিরহাট সীমান্ত দিয়ে শহীদের দেহাবশেষ বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। ১১ই ডিসেম্বর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানকে ঢাকার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী অসামান্য বীরত্বের জন্য সাত জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধাকে বীরশ্রেষ্ঠ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। হামিদুর রহমান সেই সাত জনের একজন । যুদ্ধের সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১৮ । পদকপ্রাপ্ত শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে তিনিই ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ। সংগৃহীত
শনিবাবের চিঠি / আটলান্টা/ ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮
বাংলাদেশ সময়: ৮:২৭ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
https://thesaturdaynews.com | Sikder Rahman
Development by: webnewsdesign.com